মাথার খুসকি কি জিনিস তা পরিষ্কার করে বলার প্রয়ােজন নাই। কেননা টিভিতে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন দেখতে দেখতে নিশ্চয় বিষয়টি সবারই জানা হয়ে গেছে। শ্যাম্পু কোম্পানি যতই দাবী। করুক যে, তাদের শ্যাম্পুতে খুসকি পরিষ্কার হয়ে যাবে; আসলে তা মিথ্যে কথা। তবে শ্যাম্পুতে খুসকি সাফ না হলেও চুল সাফ হয়ে যে টাক পড়ে যায়, এতে কোন সন্দেহ নাই। আমাদের সমাজে যত লােকের মাথায় টাক পড়েছে, নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই তার জন্য দায়ী হলাে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার। অথচ এলােপ্যাথিক চর্মরােগ বিশেষজ্ঞরা খুসকির রােগী পেলেই একটা না একটা শ্যাম্পু ধরিয়ে দেন, যা সত্যিই দুঃখজনক। সে যাক, খুসকি থেকে বাঁচতে চাইলে অবশ্যই শ্যাম্পু ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং তেল দেওয়ার অভ্যাস চালু করতে হবে।
Thuja occidentalis : খুসকির একটি মূল কারণ হলাে টিকা (বিসিজি, ডিপিটি, এটিএস, পােলিও, হেপাটাইটিস, এটিএস ইত্যাদি) নেওয়া। টিকা নিলে কেবল খুসকিই হয় না বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং পাতলা হতে হতে টাক পড়ে যায়। কাজেই কোন টিকা নেওয়ার দুয়েক মাস থেকে দুয়েক বছরের মধ্যে খুসকি দেখা দিলে প্রথমেই থুজা নামক ঔষধটি খেতে হবে। বিশেষ করে খুসকির সাথে যাদের শরীরে আঁচিলও আছে, তাদের প্রথমেই সপ্তাহে একমাত্রা করে কয়েক মাত্রা খুজা খেয়ে নেওয়া উচিত।
Arsenicum Album : মাথার চামড়া শুকনা, খসখসে, স্পর্শ করলে ব্যথা লাগে, বেশ গরম, রাতের বেলা ভীষণ চুলকায় ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে আর্সেনিক খেতে হবে।
Kali Sulph : ক্যালি সালফ খুসকির একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। এমনকি যদি তাতে পূজও থাকে। খুসকির মতাে মরা চামড়া উঠে এমন যে-কোন চর্মরােগেও এটি প্রয়ােগ করতে পারেন।
Sanicula : স্যানিকিউলা ঔষধটি মাথার পাশাপাশি চোখের পাতা এবং দাড়ির খুসকি দূর করতে পারে। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে অকাল বার্ধক্য, প্রচুর খেয়েও দিন দিন শুকিয়ে যায়, পায়ের তালুতে জ্বালাপােড়া, পা থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম বের হয় ইত্যাদি।
sepia : সিপিয়া খুসকির একটি ভালাে ঔষধ বিশেষত যদি মাথার চামড়া ভেজাভেজা এবং ঘিয়ের মতাে আঠালাে হয়। সিপিয়ার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে তলপেটে বল বা চাকার মতাে কিছু একটা আছে মনে হয়, রােগী তলপেটের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পায়খানার রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যাবে এই ভয়ে দুই পা দিয়ে চেপে ধরে রাখে, সর্বদা শীতে কাঁপতে থাকে, দুধ সহ্য হয় না, ঘনঘন গর্ভপাত হয়, স্বামী-সন্তান- চাকরি-বাকরির প্রতি আকর্ষণ কমে যায়।
sulphur : খুসকির একটি সেরা ঔষধ হলাে সালফার যদি তাতে অত্যধিক চুলকানী এবং জ্বালাপােড়া থাকে। এই কারণে রােগীর মধ্যে অন্য কোন ঔষধের লক্ষণ না থাকলে অবশ্যই তার চিকিৎসা প্রথমে সালফার দিয়ে শুরু করা উচিত। সালফারের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে সকাল ১১টার দিকে ভীষণ খিদে পাওয়া, গােসল করা অপছন্দ করে, গরম লাগে বেশী, শরীরে চুলকানী বেশী, হাতের তালু-পায়ের তালু-মাথার তালুতে জ্বালাপােড়া, মাথা গরম কিন্তু পা ঠান্ডা, পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার দিকে কোন খেয়াল নাই, রােগ বিছানার গরমে বৃদ্ধি পায়, ছেড়া-নােংরা তেনা দেখেও আনন্দিত হয় ইত্যাদি ইত্যাদি।
Mezereum : মেজেরিয়ামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে মাথার থেকে মােটা মােটা চামড়ার মতাে চলটা উঠতে থাকে, এগুলাের নীচে আবার পুঁজ জমে থাকে, চুল আঠা দিয়ে জট লেগে থাকে, “জ থেকে এক সময় দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে, চুলকানীর জন্য রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় ইত্যাদি।
Graphites : গ্রাফাইটিসের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে অলসতা, দিনদিন কেবল মােটা হওয়া, মাসিকের রক্তক্ষরণ খুবই কম হওয়া, চর্মরােগ বেশী হওয়া এবং তা থেকে মধুর মতাে আঠালাে তরল পদার্থ বের হওয়া, ঘনঘন মাথাব্যথা হওয়া, নাক থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া, আলাে অসহ্য লাগা ইত্যাদি। উপরের লক্ষণগুলাের দু'তিনটিও যদি কোন রােগীর মধ্যে থাকে, তবে গ্র্যাফাইটিস তার খুসকি সারিয়ে দেবে।
pleander : ওলিয়েন্ডার চুলের খুসকির একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে মাথায় ভীষণ চুলকানি, চুলকানির পরে হুল ফোটানাের মতাে ব্যথা, স্তন্যদানের পর শরীরে কাঁপুনি, চোখ তেড়া করে তাকালে মাথা ব্যথা ভালাে হয়ে যায়, উদাসীনতা ইত্যাদি।
Natrum Muriaticum : চুলের লাইন ব্রার খুসকি বা এই রকম ছাল ওঠা জাতীয় যে-কোন চর্মরােগে নেট্রাম মিউর প্রযােজ্য। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে মুখ সাদাটে এবং ফোলা ফোলা, বেশী বেশী লবণ বা লবণযুক্ত খাবার খায়, কথা শিখতে বা পড়াশােনা শিখতে দেরী হয়, ঋতুস্রাবে রক্তক্ষরণ হয় খুবই অল্প, পা মােটা কিন্তু ঘাড় চিকন ইত্যাদি।
0 Response to "মাথায় খুশকির সমস্যা দূর করতে হমিও ঔষুধ - Dandruff"
Post a Comment