১২টি বায়োকেমিক ঔষধের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

Recents in Beach

যে কোন জীব-জন্তু দংশনের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

Random Posts

Technology

"ব্রেকিং নিউজ" চোখ উঠা
Welcome To BD HomeoPathic

শিশুদের খিচুনি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা - Convulsion, Epilepsy, Seizure

 


মৃগী রােগ বা খিচুনি হলাে মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক গােলযােগ (হতে পারে লােড শেডিং কিংবা ভল্টেজের উঠানামা) যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি কিছু সময়ের জন্য তার চেতনা হারিয়ে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে খিচুনি / আক্ষেপ (convulsion) দেখা দেয়। যাতে সারা শরীর ধনুকের ন্যায় বাঁকা হয়ে যায়, গােঙানি বা অনিচ্ছাকৃত চীৎকার করতে থাকে, হাত-পা-আঙ্গুল ক্রমাগত বাঁকা এবং সােজা হতে থাকে, দাঁত দিয়ে জিহ্বা কামড়ে ধরে, মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে, অনিচ্ছাকৃতভাবে মল-মুত্র বের হয়ে যাওয়া এবং শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় (grand mal seizure) I


মৃগীর আক্রমণ শেষ হওয়ার পরে সাধারণত রােগী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং গভীর ঘুমে ডুবে যায়। রােগের আক্রমণের সময় সে যা যা করেছে, তার কিছুই মনে করতে পারে না। মৃগীরােগের আরাে যে-সব লক্ষণ প্রকাশ পায় তা হলাে চোখে উল্টাপাল্টা দেখা, কানে উল্টাপাল্টা কিছু শােনা, অল্প সময়ের জন্য আচার- আচরণ পরিবর্তন। হওয়া, নির্দিষ্ট একটি অঙ্গে ঝাকুনি দেওয়া, হঠাৎ করে ঘামতে থাকা, এক মুহূর্তের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, বমিবমি লাগা, অকারণে ভয় ভয় লাগা, উপরের দিকে আড়চোখে তাকানাে, মুখের পেশীর সঙ্কোচন্ত প্রসারণ ইত্যাদি ইত্যাদি (petit_mal seizure)। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাথায় আঘাত পাওয়া, মসি-স্কে ইনফেকশান, ব্রেন টিউমার, রক্তনালীর রােগ, মাদকাসক্তি, শরীরে খনিজ লবণের ভারসাম্যহীনতা, সীসার বিষক্রিয়া প্রভৃতি কারণে মৃগী রােগ হতে দেখা যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃগী রোগের পেছনে কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। মৃগীর আক্রমণ দুয়েকদিন পরপর হতে পারে আবার অনেক বছর পরপরও হতে পারে; তবে বিষয়টি চলতে থাকে সারা জীবন ধরে। এমনকি ঘুমের মধ্যেও ইহার আক্রমণ হতে পারে। সাধারণত শারীরিক উত্তেজনা, উজ্জ্বল আলাের ঝলকানি, হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ শােনা, আবেগ-উত্তেজনা ইত্যাদির ফলে মৃগীর আক্রমণ শুরু হয়।


কোন কোন রােগী কিছু সতর্কীকরণ লক্ষণের (aura) মাধ্যমে বুঝতে পারে যে, এখনই মৃগীর আক্রমণ শুরু হতে যাচ্ছে : আবার অনেক রােগীই সতর্কীকরণ লক্ষণ না পাওয়ায় আগেভাগে বুঝতে পারে না। সতর্কীকরণ লক্ষণের মধ্যে আছে ভয় লাগা, পেটের মধ্যে অস্বস্তি লাগা, চোখে সর্ষে ফুল দেখা, মাথাঘুরানি, অদ্ভুত গন্ধ পাওয়া ইত্যাদি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃগীর আক্রমণ হয়অল্প সময়ের জন্য। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খিচুনি থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে, কিছু সময়ের জন্য ঝিমানি আসে অথবা মাথা এলােমেলাে-হতবুদ্ধি হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরণের লক্ষণের উপর ভিত্তি করে মৃগী রােগকে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। মৃগীর আক্রমণ হলে তাতে হস্তক্ষেপ করা যাবে না; তবে রােগী যাতে আগুনে পুড়ে, পানিতে ডুবে অথবা ধারালাে কোন অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি রােগীর শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে মুখের ফেনা পরিষ্কার করে, জিহ্বা নাড়াচাড়া করে, রােগীর মাথায় বালিশ দিয়ে, রােগীকে সুবিধামতাে কাত চিৎ করে ইত্যাদির মাধ্যমে শ্বাস নিতে সাহায্য করতে হবে।


এই রােগীদের আগুনের কাছে বা পানিবদ্ধ স্থানে একাকী অবস্থান করা বিপজ্জনক। সর্বদা সাথে একটি ডাক্তারী সার্টিফিকেট বা মৃগী রােগী' লেখা একটি লকেট গলায় ঝুলিয়ে রাখা উচিত। মৃগীর আক্রমণ যদি পাঁচ মিনিটের বেশী স্থায়ী হয় অথবা জ্ঞান ফিরার পূর্বেই আবার খিচুনি শুরু হয় কিংবা খিচুনি শেষ হওয়ার পরেও রােগী বেহুশ হয়ে পড়ে থাকে, তবে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা, প্রচুর বিশ্রাম নেওয়া এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকা মৃগীর উৎপাত কমাতে যথেষ্ট সাহায্য করে। রােগের অন্তর্নিহিত কারণটি সনাক্ত করতে পারলে এবং সে অনুযায়ী  হােমিও ঔষধ প্রয়ােগ করা গেলে, মৃগী রােগ সম্পূর্ণ স্থায়ীভাবে নিরাময় করা সম্ভব। অন্যথায় ঔষধ প্রয়োগে কেবল রােগের তীব্রতা কমিয়ে রাখা যাবে। (বিঃ দ্রঃ মৃগী রােগ ছাড়াও অন্য যেকোন কারণেই খিচুনি হােক কেন, তাতে এই অধ্যায়ে বণিত ঔষধগুলাের কোন একটি লক্ষণ মিলিয়ে খাওয়াতে থাকুন। একই ঔষধ দীর্ঘদিন না খেয়ে বরং লক্ষণ অনুযায়ী কয়েকটি ঔষধ সিলেক্ট করে একটির পর আরেকটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান।

শিশুদের খিচুনি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা


Bufo Rana : ব্যাঙের বিষ থেকে তৈরী করা এই ঔষধটি মৃগী রােগের একটি শ্রেষ্ট ঔষধ। মৃগী রােগের খিচুনি যারা দেখেছেন তারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যে, রােগীর তখনকার অঙ্গভঙ্গি এবং লাফালাফির সাথে ব্যাঙের আকৃতি এবং লন্থজফের একটা অদ্ভুত মিল আছে। যে-সব যুবক-যুবতী অতিরিক্ত যৌনকর্ম অথবা হস্তমৈথুনের কারণে মৃগী রােগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের জন্য বিউফো এক নাম্বার ঔষধ। বিউফোর লক্ষণ হলাে মৃগীর আক্রমণের শুরুতে চীৎকার দেওয়া, মুখমন্ডল লাল হওয়া এবং মৃগীর আক্রমণ চলে যাওয়ার পরে ঘুমিয়ে যাওয়া। মাঝরাতে, মাসিকের সময়, অমাবশ্যা এবং যৌন উত্তেজনার সময় মূগীর আক্রমণ বেশী হয়। রাতে ঘুমের মধ্যে মৃগীর আক্রমণ বেশী হয় এবং রােগীর ঘুম ভাঙতেও পারে আবার নাও ভাঙতে পারে। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরে তার প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হয়। রােগী ঠান্ডা বাতাস অপছন্দ করে কিন্তু গরম রুমে আবার রােগের উৎপাত বৃদ্ধি পায়।


Cuprum Metallicum : কিউপ্রাম মেট মৃগী রােগের সবচেয়ে শক্তিশালী ঔষধ। ইহার প্রধান লক্ষণগুলাে হলাে চক্ষুগােলক উপরের দিকে উল্টে যায়, হাতের বৃদ্ধাঞ্জলির আক্ষেপ, মাথা এবং পায়ের পাতাসহ সমস্ত শরীর পেছনের দিকে বেকে যায়, খিচনি প্রথম শুরু হয় হাতের আঙুল অথবা পায়ের আঙুলে এবং পরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, দুটি অক্রমণের মধ্যবর্তী সময়ে রােগী খুব অস্থির থাকে। ভয় পেলে এবং পানিতে ভিজলে মৃগীর আক্রমণ হয়। ক্রোধ, বদমেজাজ, অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা ইত্যাদি এই ঔষধের মানসিক লক্ষণ।


Oenanthe Crocata : ওইন্যান্থ ক্রোকেটা মৃগীর শ্রেষ্ট ঔষধগুলির মধ্যে একটি। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে হঠাৎ সম্পূর্ণ অচেতন হওয়া, মুখ দিয়ে ফেনা ওঠা, মুখমণ্ডল লাল এবং ফোলা ফোলা, দাঁত কপাটি লাগা এবং হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া। মৃগীর আক্রমণের সময় যাদের বমি হয় অথবা কানের পর্দায় সমস্যা হয় অথবা পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে প্রযােজ্য।


Hydrocyanic Acid : হিউজের মতে, হাইড্রোসায়নিক এসিড মৃগীর একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং স্প্যাসিফিক ঔষধ।নতুন রােগের ক্ষেত্রে এটি সর্বোত্তম ঔষধ। এতে অজ্ঞান হওয়া, মুষ্টিবদ্ধ হাত, কিছু গিলার সময় ভেতরে গরগর শব্দ হওয়া, শরীর পাথরের মতাে ঠান্ডা হওয়া, দাঁত কপাটি লাগা, মুখ থেকে ফেনা নির্গত হওয়া, ঢােক গিলতে না পারা প্রভৃতি সব লক্ষণই আছে। মৃগীর আক্রমণের পরে ঘুমঘুম ভাব এবং ভীষণ দুর্বলতা অবসন্নতা-ক্লান্তি আছে।


Artemisia Vulgaris : ভয় পেয়ে, মনের আবেগ উত্তেজনা থেকে, মাথায় আঘাত পাওয়া, মাসিকের গন্ডগােল, শিশুদের দাঁত ওঠার সময় প্রভৃতি কারণে মৃগীর আক্রমণ হলে আর্টিমিসিয়া ভালগেরিস প্রযোজ্য। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণগুলাে হলাে ঘনঘন মৃগীর আক্রমণ হওয়া, এমনকি দিনে কয়েকবার, আক্রমণ শেষে গভীর ঘুম পাওয়া এবং দুর্গন্ধযুক্ত (রসুনের মতাে প্রচুর ঘাম হওয়া। হালকা মাত্রার মৃগীতেও এটি ফলদায়ক (petit mal seizure)। এটি শিশু এবং অসন্ন যৌবনা তরুণীদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর।


cicuta Virosa : সিকিউটা মৃগীর ভাল ঔষধগুলাের মধ্যে একটি। ইহার প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো হলাে খিচুনির সময় মাথা পেছন দিকে বাঁকা হওয়া, অদ্ভুত ধরণের জিনিস খাওয়া ইচ্ছা হওয়া (যেমনকয়লা), এক দৃষ্টিতে কোন দিকে তাকিয়ে থাকা, মাথা এক দিকে কাত হওয়া বা মােচড় দেওয়া, সারাদিন বাম হাতে ঝাকুনিদেওয়া ইত্যাদি।


Kali Bromatum; পুরুষদের বেলায় অতিরিক্ত যৌনকর্ম বা হস্তমৈথুন থেকে মৃগী রােগ হলে এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের সময় অথবা মাসিকের কিছু পূর্বে মৃগীর আক্রমণ হলে তাতে ক্যালি ব্রোম প্রযােজ্য। এদের শরীরের ব্রণ থাকে প্রচুর, স্মরণশক্তি দুর্বল, হাত দুটি সর্বদা কোন না কোন কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।


Indigo : সাধারণত কৃমির উৎপাতের কারণে মৃগীর খিচুনি হলে ইন্ডিগাে ভালাে কাজ করে। ঘনঘন মৃগীর আক্রমণ হলে ইন্ডিগাে ব্যবহার করে তার মাত্রা অনেক কমিয়ে আনা যায়। ইন্ডিগাের রােগীদের মৃগীর আক্রমণের পূর্বে মেজাজ থাকে ভীষণ খারাপ আবার মনের দুঃখে তারা রাতের পর রাত একা একা কাদে কিন্তু আক্রমণে পরে তারা ভীতু হয়ে যায়। এদের আক্রমণ শুরু হয় ঠান্ডা থেকে অথবা ভয় পেলে। ইহার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) পেটের উপরের অংশে শুরু হয়ে মাথার দিকে গরম ভাপ উঠতে থাকে এবং মাথার ভেতরে ঢেউ খেলানাের মতাে অনুভব হয়। কখনও কখনও চোখে ঝাপসা দেখে। যে-কোন কৃমির ঔষধই গর্ভবতীদের খাওয়ানাে নিষিদ্ধ, তেমনি এটিও। 


Calcarea Carbonica : ক্যালকেরিয়া কার্বের   রােগীদের পা দুটি থাকে ঠান্ডা, মাথা অর্থাৎ কপাল ঘামে বেশী, হাত দুটি থাকে নরম তুলতুলে, এদের ঘাম-পায়খানা-প্রস্রাব সবকিছু থেকে টক গন্ধ আসে এবং এদের স্বাস্থ্য থাকে। থলখলে মােটা। ইহার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) পেটের উপরের অংশে শুরু হয়ে উপরের দিকে ছড়াতে থাকে অথবা তলপেটের দিকে ছড়াতে থাকে এবং ইহার পরই খিচুনি শুরু হয়। কখনও কখনও মনে হয় হাতের ওপর একটি ইদুর দৌড়াচ্ছে।


Causticum : মাসিক অনিয়মিত হওয়ার কারণে মৃগী রােগ হলে অথবা মেয়েদের প্রথম মাসিক শুরু হওয়ার বয়সে মৃগী রােগ হলে কষ্টিকাম প্রযােজ্য। তাছাড়া খোলা বাতাসে হাঁটার সময় পড়ে যায় আবার সাথে সাথেই ঠিক হয়ে যায়। অমাবশ্যার সময় যদি মৃগীর আক্রমণ হয় তবে কষ্টিকাম উপকারী। ঘুমের ভেতরে মৃগীর আক্রমণ হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রস্রাব বেরিয়ে যায়। ইহার মানসিক লক্ষণ হলাে অন্যের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে পারে না।


Camphora: ক্যাম্ফা মৃগী পুরােপুরি নির্মূল করতে না পারলেও মৃগীর আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখতে পারে এবং অাক্রমণের সময়কাল কমিয়ে আনতে পারে। এতে সারা শরীরের সাথে সাথে এমনকি জিহ্বা, চোখ এবং মুখের পেশীতেও খিচুনি হওয়ার লক্ষণ আছে। আক্রমণের পরে বেহুশের মতাে ঘুমাতে থাকে এবং হাত-পা-মাথা বরফের মতাে ঠান্ডা হয়ে যায়।


Silicea : সিলিসিয়া ঔষধটি যাদের হাড়ের বৃদ্ধিজনিত সমস্যা আছে অর্থাৎ রিকেটগ্রস্থ লােকদের ক্ষেত্রে ভালাে কাজ করে। ইহার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) পেটের উপরের অংশে শুরু হয়ে থাকে এবং শরীরের বাম পাশে শীত শীত বােধ হওয়া বা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া এই ঔষধের একটি উল্লেখযােগ্য সতর্কীকরণ লক্ষণ। মানসিক চাপ বা আবেগ- উত্তেজনার কারণে আক্রমণের সূচনা হয় এবং অমাবশ্যা-পূর্ণিমায় আক্রমণের মাত্রা বেড়ে যায়। এই ঔষধের মেরুদন্ডের সাথে সম্পর্কিত কোন কোন রােগ লক্ষণ থাকবেই।


Nux Vomica : যারা অধিকাংশ সময়ে বদহজমে ভােগে, বদমেজাজী এবং অল্প শীতেই কাতর হয়ে পড়ে, এটি তাদের ক্ষেত্রে ভালাে কাজ করে। ইহ'র সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) পেটের উপরের অংশে শুরু হয়ে থাকে এবং মুখের ওপর পােকা হাঁটতেছে এমন মনে হয়।


Plumbum Metallicum : প্লামবামের মৃগীর আক্রমণের সূচনা হয় হাই তােলা অথবা মাথাঘুরানির মাধ্যমে এবং আক্রমণের শেষে মনের অবস্থা হয় কিংকর্তব্যবিমূঢ় অর্থাৎ রােগীর আক্কল- বুদ্ধি ফিরে পেতে অনেক সময় লাগে। আক্রমণের পরে মাথা ডান দিকে কাত হয়ে থাকে। মাথার রক্তনালীর রােগ এবং ব্রেন টিউমারের কারণে মৃগী হলে এটি প্রযােজ্য। সাথে যদি পুরনাে কোষ্টকাঠিন্য এবং পেট ব্যথার সমস্যা থাকে, তবে অবশ্যই প্লামবাম প্রয়ােগ করতে


sulphur : কোন চর্মরােগ (যা থেকে পুঁজ বের হতাে) কড়া ঔষধ ব্যবহার করে চাপা দেওয়ার ফলে মৃগী রােগ হলে সালফার প্রযােজ্য। সালফার সেই চর্মরােগ ফেরত আনবে এবং ভেতর থেকে সারিয়ে তুলবে এবং সাথে সাথে মৃগীকেও বিদেয় করবে। কাজেই মূগী দেখা দেওয়ার পুর্বে যাদের নানা রকম চর্মরােগ হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের প্রথমেই কিছুদিন সালফার খেয়ে নেওয়া উচিত। তাছাড়া সালফারের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলাের মধ্যে আছে। সকাল ১১টার দিকে ভীষণ খিদে পাওয়া, শরীর গরম লাগা, রােগ রাতে বৃদ্ধি পাওয়া, রােগ গরমে বৃদ্ধি পাওয়া, মাথা গরম কিন্তু পা ঠান্ডা, মাথার তালু পায়ের তালুসহ শরীরে জ্বালাপােড়া ইত্যাদি।


Hyoscyamus Niger : হায়ােসায়েমাসের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলাে হলাে মুখের পেশীতে খিচুনি বেশী হওয়া, অট্টহাসি- চীৎকার-হৈহুল্লোর করতে ইচ্ছে হওয়া, দুঃখবােধ, মানুষকে সন্দেহ করা, নগ্ন হওয়ার ইচ্ছা ইত্যাদি।


Agaricus Muscarius : এগারিকাসের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে মৃগীর আক্রমণের পরে মাথায় নানা রকমের চিন্তার জোয়ার এসে যায়, বকবকানি, দীর্ঘস্থায়ী মাথা ঘুরানি, খোলা বাতাসে হাটার সময় মৃগীর আক্রমণ হওয়া।


Belladonna : বেলেডােনা মৃগীর প্রথম দিকের  আক্রমণে বেশী প্রযােজ্য। তাপ, লাল রঙ এবং জ্বালাপােড়া হলাে বেলেডােনার তিনটি প্রধান লক্ষণ। যদি সারা শরীর গরম হয়ে যায়, মুখ লাল হয়ে যায় এবং শরীরে জ্বালাপােড়া হয়, তবে বেলেডােনা দিতে হবে। আলাে, নড়াচড়া, গােলমাল এবং ঝাকুনিতে রােগের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।


Absinthium : এসিনথিয়ামের প্রধান লক্ষণ হলাে কম্পন; জিহ্বা, হৃৎপিন্ড প্রভৃতি কাপতে থাকে। মুখ বিকৃত করা, জিহ্বা কামড়ে ধরা, মুখে রক্তযুক্ত ফেনা, পুরােপুরি অজ্ঞান হওয়া, হঠাৎ করে তীব্র মাথা ঘুরানি, আক্রমণের পরে বুদ্ধিহীনতা এবং স্মরণশক্তি নষ্ট হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ এতে আছে।

Cimicifuga/ Actea Racemosa : সিমিসিফিউগার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) হলাে মাথার ভেতরে ঢেউ খেলানাের অনুভুতি হওয়া। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে বিষন্নতা বা মনমরা ভাব, ঘাড়ের পেছনে ব্যথা, বিভিন্ন জয়েন্টে বাতের সমস্যা বেশী হওয়া ইত্যাদি।


Armonium Bronatum : এমন ব্রোমের সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) হলাে অজ্ঞান হওয়ার অথবা দম বন্ধ হওয়ার অনুভুতি যা পেটের ওপরের অংশে শুরু হয়ে বুকের দুই পাশে এবং গলার দিকে যেতে থাকে। নখের নীচে অস্বস্তি বােধ হয় যা কামড় দিলে কমে যায়।


Argentum Nitricum : ভয় পেয়ে বা মাসিকের সময় মৃগীর আক্রমণ হলে তাতে আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম প্রযােজ্য। মৃগীর আক্রমণের কয়েক দিন অথবা কয়েক ঘণ্টা পূর্ব থেকেই চোখের তারা প্রসারিত হয়ে থাকে, আক্রমণের পরে রােগী খুবই অস্থির থাকে এবং তার হাত কাপতে থাকে, কঙ্কালসার, শিশুকে মনে হয় বৃদ্ধের মতাে, জোরে হাঁটার ইচ্ছা, মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি ভীষণ লােভ ইত্যাদি।

Asterias Rubens : এটি মৃগীর একটি প্রাচীন ঔষধ। মুখ লাল হয়ে যায়, মাথা গরম হয়ে যায় এবং মনে হয় মাথার চারদিকের বাতাস গরম হয়ে গেছে। পায়খানা শক্ত থাকে এবং মাথার ভিতরে ইলেকট্রিক শকের মতাে ব্যথা


Cuprum Aceticum : ইহার সতর্কীকরণ লক্ষণ (aura) হাটুতে শুরু হয়ে তলপেটের দিকে যায় এবং তখন রােগী অচেতন হয়ে পড়ে।

Share This

0 Response to "শিশুদের খিচুনি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা - Convulsion, Epilepsy, Seizure"

Post a Comment

Popular Posts