দুর্ভাগ্যজনকভাবে সারা বিশ্বের মতাে আমাদের দেশেও ইদানীং অটিজম আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অটিজম শিশুদের এমন একটি মানসিক রােগ যাতে তারা কথা, কাজ-কর্ম বা খেলাধুলা ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য শিশুদের সাথে সম্পর্ক তৈরী করতে পারে না। কেবল শিশু নয়, বড়দের সাথেও তারা সম্পর্ক গড়তে পারে না। মােটকথা ইহারা সামাজিকতা আয়ত্ত করতে পারে না। সারাক্ষণ নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সদা সর্বদা কল্পনার এক অবাস্তব জগতে ডুবে থাকে তারা। নানা রকমের কাল্পনিক শব্দ শানে, কাল্পনিক দৃশ্য দেখে। কিছু বিষয়কে তারা খুবই পছন্দ করে এবং দিনরাত সেগুলাে নিয়েই পড়ে থাকে। আবার কিছু বিষয়কে তারা ভয় পায়, সহ্য করতে পারে না। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের বিচার-বুদ্ধির কোন উন্নতি হয় না। ডাক্তারী ভাষায় এদেরকে বলা হয় বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু (special need children) বা কোন একটি বিষয়ে অত্যধিক ঝোঁকসম্পন্ন শিশু (gifted baby)। সাধারণভাবে এদেরকে বুদ্ধিপ্রতিবন্দি হিসেবে গণ্য করা হয়। শেষকথা হলাে সারা জীবনই পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্য তারা একটি বােঝা হয়ে বেঁচে থাকে। তার চাইতেও দুঃখজনক ব্যাপার হলাে, এলােপ্যাথিক ডাক্তাররা এবং মানসিক রােগ বিশেষজ্ঞরা অটিজমের কোন কাযর্কর চিকিৎসা নাই বলে ঘােষণা দিয়ে থাকেন। ফলে অভিবাকরা হতাশ হয়ে সন্তানের রােগমুক্তির আশা ত্যাগ করেন। অপদার্থ সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে ভেবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া পিতা-মাতার আর কিছুই করার থাকে না। অথচ আমরা অনেকেই জানি না যে, উপযুক্ত হােমিও চিকিৎসা অবলম্বন করলে খুব সহজেই অটিজম আক্রান্ত শিশুদেরকে সুস্থ করে তােলা যায়। হােমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং হােমিও ডাক্তারদের লেখায় অটিজমের অগণিত কেইস হিস্ট্রি দেখা যায়, যাদেরকে তারা সফলভাবে রােগমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন।
ব্রিটিশ হােমিও চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ বার্নেটের লেখায় দেখা যায় যে, আজ থেকে একশ বছরেরও বেশী সময় পুর্বে তিনি এমনকি মধ্যবয়ষ্ক অটিজমের রােগীকেও সুস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলােতে ব্যাপকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ডিপিটি, পােলিও, হাম, হেপাটাইটিস, এমএমআর প্রভৃতি টিকার (Vaccine) পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শিশুরা অটিজমে আক্রান্ত হয়। পক্ষান্তরে টিকার বিষক্রিয়ায় যে-সব রােগ হয়, তাদের চিকিৎসায় হােমিওপ্যাথিক ঔষধের সাফল্য একটি ঐতিহাসিক সত্য। ইন্টারনেটে যে-কেউ একটু খোঁজ নিলে হােমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে অটিজম থেকে মুক্ত হওয়া অসংখ্য শিশুদের কেইস হিস্ট্রি দেখতে পাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কমপিউটার বিজ্ঞানী এমি ল্যানস্কি-র (Amy L. Lansky, Ph. D) শিশু সন্তান যখন দুরারােগ্য মানসিক ব্যাধি অটিজমে আক্রান্ত হয়, তখন বিশ্বখ্যাত সব সাইকিয়াট্রিস্ট, নিউরােলজিষ্টরা কয়েক বছর চেষ্টায়ও তাকে সুস্থ করতে ব্যর্থ হয়। তারা ঘােষণা করে যে, এই রােগের কোন চিকিৎসা নাই। কিন্তু এমি লিনষ্কির বিশ্বাস হয় নাই যে, দুনিয়াতে অটিজমের কোন চিকিৎসাই নাই। পরবর্তীতে স্থানীয় একজন বিজ্ঞ হােমিও চিকিৎসক মাত্র ছয় মাসের চিকিৎসায় শিশুটিকে অটিজম থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করেন। এই ঘটনার পর এমি ল্যানস্কি নাসার চাকুরি ছেড়ে দিয়ে হােমিওপ্যাথির উপর একটি ডিপ্লোমা কোর্স করে বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার অটিজমসহ দুরারোগ্য রােগ ব্যাধিতে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় আত্মনিয়ােগ করেছেন। তার মতে, “হােমিওপ্যাথিতে প্রচলিত কিছু থিউরীকে আপাত দৃষ্টিতে অবৈজ্ঞানিক মনে হয় : কিন্তু হােমিওপ্যাথি যে কাজ করে আমার ছেলেই তার জ্বলন্ত প্রমাণ"। বস্তুত হােমিওপ্যাথিক ঔষধে এমন সব জটিল শারীরিক-মানসিক রােগও আরােগ্য হয়, যাকে অন্যান্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একেবারে অসম্ভব-অবিশ্বাস্য মনে করা হয়ে থাকে। এজন্য হােমিওপ্যাথিক ডাক্তাররা বিশ্বাস করেন যে, হােমিওপ্যাথি হলাে অসম্ভবকে সম্ভব করার চিকিৎসা বিজ্ঞান। পরিশেষে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের পিতা-মাতার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, তারা যেন কালবিলম্ব না করে তাদের সন্তানকে কোন হােমিও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসাধীনে ন্যস্ত করেন।
চিকিৎসা :- আসলে অটিস্টিক শিশুদের একটি একটি লক্ষণ খুঁজে খুজে চিকিৎসা করার চাইতে বরং সামগ্রিক দৈহিক- মানসিক লক্ষণ সমষ্টির ভিত্তিতে চিকিৎসা করতে হবে। হাঁ, লক্ষণ সমষ্টির ভিত্তিতে অনেক ঔষধের লক্ষণই আসতে পারে একথা সত্য (এবং সে অনুযায়ী সে-সব ঔষধ অবশ্যই প্রয়ােগ করতে হবে), তবে কিছু কিছু ঔষধ আছে যাদের লক্ষণ বেশীর ভাগ অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এদের মধ্যে আছে Stramonium, Hyoscyamus, Belladonna, Mercurius, Cuprum Metallicum, Veratrum Album, Zincum Metallicum, Opium, Saccharum Officinale, Carcinosin, Cicuta Virosa, lodium, Baryta Carbonica, Thyroidinum use
Thuja Occidentalis : থুজা নামক হােমিও ঔষধটি মানবজাতির জন্য মহান আল্লাহুর একটি বিরাট রহমত স্বরূপ। কেননা আধুনিক যুগের শতকরা ৯৫ ভাগ রােগেরই মূল কারণ হলাে টিকা (Vaccines) এবং টিকার ক্ষতিকর ক্রিয়া নষ্ট করার সবচেয়ে ভালাে ঔষধ হলাে থুজা। বিশেষ করে অটিজমেরও সবচেয়ে বড় কারণ হলাে এই টিকাসমূহ; প্রধানত ডিপিটি (DPT), এমএমআর (MMR), বিসিজি (BCG)। টিকার ধ্বংসাত্মক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীরা যতই হুশিয়ারী উচ্চারণ করুক না কেন, এলােপ্তাথিক ডাক্তাররা তাতে ডেমকেয়ার। তাদের মতে, টিকাতে ক্ষতির চাইতে উপকার বেশী। তাই মানবজাতীর বৃহত্তর কল্যাণে (?) টিকা কর্মসূচী চালিয়ে যেতে হবে। ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন টিকা বাজারে আসছে। নতুন নতুন ধ্বংসাত্মক ভাইরাস (টিকার মাধ্যমে শিশুদের শরীরে ঢুকে যাচ্ছে। চতুরমুখী প্রচার-প্রপাগান্ডার মাধ্যমে পাবলিকের ব্রেনওয়াশিং চলছে। স্বাস্থ্যসেবার নামে রােগের সেবা চলছে। রােগ নির্মূলের নামে রােগ বিস্তার করা হচ্ছে। মানবজাতিকে সুস্থ করার নামে অসুস্থ করা হচ্ছে। সে যাক, থুজার লক্ষণ অন্য কোন অধ্যায়ে দেখে নিবেন এবং কোন টিকার ক্ষতিকর ক্রিয়া বিনষ্ট করার জন্য কোন ঔষধ খাওয়াতে হবে তা টিকা অধ্যায়ে বলা আছে।
stramonium : স্ট্র্যামােনিয়ামের প্রধান লক্ষণ হলাে (মানবজাতির যাহা মূল ভয়) একা থাকার ভয় বা নিঃসঙ্গতার ভয় এবং অন্ধকারকে ভয় পাওয়া (আর এই কারণেই মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বাস করে। শিশুরা ভীত শঙ্কিত অবস্থায় ঘুম থেকে জেগে ওঠে ,গােঙাতে থাকে কাউকে চিনতে পারে না সামনে যাকে পায় তাকেই আকড়ে ধরে, এমনকি আসবাবপত্রকেও আকড়ে ধরে,চেনা জিনিসকে অচেনা মনে হয়, ভয় পায় কেউ তাকে হয়ত আঘাত করবে ইত্যাদি।
Thyroidinum : থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে তৈরী করা এই ঔষধটি অনেক ক্ষেত্রে অটিজমের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা আমরা জানি যে, থাইরয়েড হরমােনগুলাে আমাদের শারীরিক-মানসিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং আমাদের রােগপ্রতিরােধ ক্ষমতা (immunity) বা ইমউনিটি সৃষ্টি এবং সুরক্ষা করে থাকে। এই কারণে ক্যানসার, অটোইমউন ডিজিজ (Autoimmune Diseases), অটিস্টিক ডিজিজ (Autism Spectrum Disorder-ASD) Susita contest থাইরয়েডিনামের ব্যবহার আবশ্যক। থাইরয়েডিনামকে বলা হয় কালাে বাক্স (Black Box) যাতে মানুষের অতীতের ঘটনা-দুর্ঘটনা জমা থাকে। এটি রােগীর সিস্টেমে চাপা পড়া অতীতের দুর্ঘটনাকে বের করে নিরাময় করে থাকে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলাে গর্ভকালীন এবং প্রসবকালীন সময়ের দুর্ঘটনা, একটি বিশেষ ধরনের মুখভঙ্গি এবং নির্দিষ্ট একটি ঔষধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে ঘটতে দেখা যায়। এই ঔষধটি অনেকক্ষেত্রে রােগীর গুপ্ত লক্ষণকে প্রকাশ করে দেয় এবং এভাবে তার সঠিক ঔষধ নির্বাচনে সহায়তা করে থাকে। Cupram_Metallicum : শিশুরা অপরিচিত কাউকে কাছে আসতে দেখলে ভয় পায়, ভয়ে চীৎকার দিয়ে উঠে।
অটিজমের চিকিৎসার জন্য মানসিক রোগ অধ্যায়ে আলােচিত ঔষধসমূহ দেখতে হবে।
0 Response to "বুদ্ধি প্রতিবন্দি। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ঔষধ"
Post a Comment